Recession | অর্থনৈতিক মন্দা কি? প্রভাব এবং ফলাফল

2
682
Recession কিংবা অর্থনৈতিক মন্দা
সর্বশেষ আপডেট: February 25, 2024
You are here:
প্রত্যাশিত পড়ার সময়: 2 মিনিট

“Recession” কিংবা “অর্থনৈতিক মন্দা” এই শব্দটি শুনতে অনেক ছোট মনে হলেও এর তাৎপর্য এবং প্রভাব অনেকবেশী গুরুতর হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি মুলত একটি দেশের অর্থনীতির আকারা বৃদ্ধি কিংবা হ্রাস পাবার পরিমাণকে বুঝিয়ে থাকে যার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন, দেশটির অর্থনীতি শক্তিশালী নাকি দুর্বল হচ্ছে।

বিশ্বে এখন যেই পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাতে আমাদের বড় আকারের “Recession” কিংবা “অর্থনৈতিক মন্দা” এর মধ্যে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী। আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে এই সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হবে যাতে করে ট্রেডিং মার্কেটে এর প্রভাব কেমন হতে পারে এবং কিভাবে আপনি এই বিষয়টিতে নিজেকে আগে থেকেই প্রস্তুত রাখবেন, সেটি সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পাবেন।

Recession | অর্থনৈতিক মন্দা কি?

সহজ কথায় মন্দা হচ্ছে, কোনও দেশের অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি এবং শক্তির পরিমাণ স্থবির (দুর্বল) হয়ে পরাকে বোঝায়। এটি পরিমাপ করার সবথেকে সহজ মাধ্যম হচ্ছে, যদি কোনও দেশের অর্থনীতির GDP এর প্রবৃদ্ধির পরিমাণ পর পর ২ প্রান্তিক (quarter) এর হিসাবে কমে আসে তাহলে সেটিকে অর্থনৈতিক মিন্দা হিসাবে গন্য করা হয়। এছাড়াও আরও বেশকিছু জটিল আকারের সুত্র ব্যবহার করে এই Recession কিংবা অর্থনৈতিক মন্দা সময়কাল, ব্যাপ্তি ইত্যাদি বিষয়গুলো হিসাব করা হয়ে থাকে।

যেমন যুক্তরাষ্ট্রের (USA) অর্থনীতি মন্দার মধ্যে পতিত হয়েছে কিনা সেটা ক্যালকুলেটে করার কাজটি করে থাকে National Bureau of Economic Research (NBER). এরা মুলত একটি নন-প্রফিট প্রতিষ্ঠান, যাদের প্রধান কাজ হচ্ছে, Nonfarm Payroll, Industrial Production এবং Retail Sales এর ড্যাটাগুলো পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে Recession কিংবা অর্থনৈতিক মন্দা পরিমাপ করা।

যেমন আমাদের দেশে এই কাজটি করে থাকে, বিভিন্ন ধরনের পলিসি রিসার্চ প্রতিষ্ঠানগুলো এবং সংগঠনগুলো।

অর্থনৈতিক মন্দার বিশ্লেষণ

শিল্প বিপ্লব এর সময় থেকে এখন পর্যন্ত বেশীরভাগ দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে খুব ধির-স্থির গতিতে তবে অর্থনীতির সংকোচন হবার সময়, বিষয়টি ঠিক বিপরীত। International Monetary Fund (IMF) এর তথ্য মতে, ১৯৬০ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে ১২২ বার অর্থনৈতিক মন্দা দেখা যায় যেটি ২১ বৃহদাকার অর্থনীতিকে ব্যাপক আকারে প্রভাবিত করেছে। তবে পূর্বে সংগঠিত মন্দার সাথে বর্তমান সময়ের কিছু পার্থক্য রয়েছে।

যেমন এখনকার সময়ে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার ব্যাপ্তি খুব বেশীদিনের জন্য হয়না এবং খুব কমই একটি দেশের অর্থনীতিতে মন্দা দেখা যায়।

অর্থনৈতিক উৎপাদন এবং কর্মসংস্থানের হ্রাস যা মন্দার কারণে ঘটে, তা স্ব-স্থায়ী (self-perpetuating) হতে পারে। যেমন ধরুন, বাজারে যদি কোনও পন্য কিংবা সেবার গ্রাহক চাহিদা (consumer demand) কমতে শুরু করে তাহলে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে টিকে থাকার জন্য নিজ খরচ (Operation Cost) কমিয়ে আনতে হবে। ফলাফল হিসাবে প্রতিষ্ঠানগুলো তখন কর্মী ছাটাই (layoff) করবে। এটির প্রভাব তখন দেখতে পাওয়া যাবে গ্রাহকের খরচ করার প্রবনতার উপর যা পরবর্তীতে আরও গ্রাহক চাহিদা হ্রাস করবে।

একই রকমের করে, Bear Market (বেয়ারিশ মার্কেটে) যা মুলত অর্থনীতিক মন্দার সাথে জড়িত সেটি সম্পদের পরিমাণকে (ভ্যালু) কমিয়ে দিতে পারে। এতে করে হটাত করেই দেখবেন, আপনার সম্পদের আর্থিক মুল্য কমে গেছে যার ফলে গ্রাহকের খরচ করার প্রবণতাও হ্রাস পেতে থাকে।

The Great Depression

Great Depression” এই শব্দটির সাথে যদি আপনার পরিচয় না থাকে, এটি ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সবথেকে বড় আকারের অর্থনৈতিক মন্দা যার ব্যাপ্তি কাল ছিল ১৯২৯ থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত। সেই সময়ের পর থেকে বিভিন্ন দেশের সরকার মুলত বড় আকারের এই মন্দার সময় থেকে নিজেদের অর্থনীতিকে রক্ষার জন্য Fiscal Policy (রাজস্ব নীতিমালা) এবং Monetary Policy (আর্থিক নীতিমালা) প্রনয়ন এবং ব্যবহার করা শুরু করে যাতে করে বড় আকারের অর্থনৈতিক বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব হয়।

অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবকে কমিয়ে রাখার জন্য সরকারের কাছে বেশকিছু অর্থনৈতিক অস্ত্র (হাতিয়ার) কিংবা ফ্যাক্টর বিদ্যমান থাকে। এদের মধ্যে কিছু ফ্যাক্টরগুলো অনেকটাই স্বয়ংক্রিয় মাধ্যমে অর্থনীতিকে স্থির রাখার কাজে ব্যবহার করা হয়। যেমন ধরুন, পশ্চিমা দেশগুলোতে বিদ্যমান “Unemployment Insurance (বেকারত্তের বীমা”)। এর মাধ্যমে চাকুরী হারানো জনগণের পকেটে আর্থিক প্রণোদনার টাকা/ অর্থ চলে আসে। এছাড়াও, আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হচ্ছে, বিনিয়গের পরিমাণকে আরও তরান্বিত করার জন্য ইন্টারেস্ট রেটের পরিমাণকে কিমিয়ে আনা।
অর্থনীতির সম্প্রসারণ

একটি দেশের অর্থনীতির সম্প্রসারণ (expansions) মুলত শুরু হয় একটি “Business Cycle” অনুসরণ করে। এটি একদম সর্বনিম্ন পয়েন্ট থেকে শুরু হয় এবং শেষ হয়, একদম পিক পয়েন্টে এসে। এই পিক পয়েন্ট থেকে মুলত অর্থনীতির সম্প্রসারণ শেষ হয়ে, অর্থনীতির সংকোচন শুরু হয় যা মুলত অর্থনৈতিক মন্দার সৃষ্টি করে। নিচে একটি ডায়াগ্রাম উপস্থাপন করেছি যেটির মাধ্যমে বুঝতে পারবেন USA এর অর্থনীতির পিক পয়েন্ট ঠিক কত সময়ের জন্য চলমান ছিল।

সবথেকে বড় সমস্যা হচ্ছে, এই Recession কিংবা অর্থনৈতিক মন্দার বিষয়টি আগে-ভাগে সনাক্ত করার কোনও সুযোগ নেই। অর্থাৎ, মন্দা শেষ হয়ে যাবার পর, আমরা বুঝতে পারি যে "অর্থনৈতিক মন্দা হয়েছে"। বিনিয়োগকারী, অর্থনীতিবিদ এবং চাকুরীজীবীদের ক্ষেত্রে এই মন্দার প্রভাব ভিন্ন রকমের হতে পারে।

যেমন ধরুন, অর্থনীতি সংকোচন শুরু হবার আগেই এটির নেতিবাচক প্রভাব দেখতে পাওয়া যায় একটি দেশের ইক্যুইটি মার্কেটে। বিনিয়োগে লসের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং একই সাথে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের আয়ের পরিমাণও কমে আসতে থাকে। এই কারনে, বিনিয়োগকারীরা তখন ধরে নেন মন্দার সময় শুরু হয়ে গেছে।

২০২৪ সালের অর্থনৈতিক মন্দা

Covid পরবর্তী সময়ে বৈশ্বিক অর্থনীতির অবস্থা অতটটাও খারাপ ছিল না যা এখন বিদ্যমান রয়েছে। মুলত ২০২২ সালের পর থেকে, বিভিন্ন দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং যুদ্ধ পরিস্থিতি, এর মুল কারণ।

প্রায় প্রতিটি দেশের মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব, কর্মী ছাটাই, খাদ্য পণ্যের মুল্য বৃদ্ধি, জীবন-যাপনের মুল্য বৃদ্ধি জনিত সমস্যা লেগেই রয়েছে যার সবথেকে বড় শিকার যুক্তরাজ্য (GBP) এবং জাপান (JPY). ২০০৮ সালে সংগঠিত Global Financial Crisis এর পর এই দুইটি দেশ অফিসিয়ালি Recession কিংবা অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে পড়েছে যার মুল করন হচ্ছে টানা ২য় প্রান্তিক (quarter) এর প্রেক্ষিতে দেশ দুইটির GDP এর সংকোচন।

International Monetary Fund (IMF) এর তথ্য মতে, যদি কোনও দেশের অর্থনীতি টানা দুই প্রান্তিকে সুংকচিত হয়, তাহলে সেটি মন্দা হিসাবে গন্য হবে। এই সুত্র হিসাবে এই দেশ দুইটির বর্তমান অর্থনীতি এখন মন্দার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে।

আমরা যেহেতু স্পট ফরেক্স ট্রেডিং কিংবা কারেন্সি ট্রেডিং এর সাথে যুক্ত তাই, এই ফান্ডামেন্টাল বিষয়টিকে ভালো করে বুঝে যদি ট্রেডিং এর স্বার্থে কাজে লাগানো যায়, তাহলে বড় আকারের প্রফিট করা সম্ভব। এখন আমাদের এর জন্য কি করতে হবে সেটি জেনে নেয়া প্রয়োজন।

GBP এবং JPY ট্রেডিং গাইডলাইন

অর্থনীতিক মন্দা যেকোনো দেশের জন্যই হুমকিস্বরূপ অবস্থার তৈরি করে যার সরাসরি প্রভাব দেখতে পাওয়া যায় সেই দেশের মুদ্রার ভ্যালু এবং স্টক মার্কেটের উপর। উপরের আলোচনাগুলর মুল কারণ ছিল মন্দা সম্পর্কে আপনাকে কিছুটা ধারনা প্রদান। এখন সময় হয়েছে, কিভাবে বিষয়টিকে ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যায় সেটি জেনে নেয়ার।

  • বিদ্যমান এই সময়ে GBP এবং JPY সম্পর্কিত কারেন্সি পেয়ারগুলো খুবই ভোলাটাইল কিংবা মুভমেন্টের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হবে।
  • কারেন্সি মার্কেটে এদের প্রভাব বুঝতে পারা কিছুটা কষ্টকর হবে। এই কারনে কোনওরূপ ছোট সময়ের ট্রেডিং এনালাইসিস সেট করবেন না।
  • অল্প সময়ের ট্রেডিং সেটাপ থেকে বিরত থাকবেন। কেননা কারেন্সি পেয়ারের মুভমেন্ট মুলত নির্ভর করে, মার্কেটে বিদ্যমান ট্রেডারদের উপর। এখন, ট্রেডাররা কিভাবে এই কারেন্সি দুইটির ভ্যালুকে নির্ণয় করবে সেটি বোঝার জন্য ন্যুনতম H4 টাইমফ্রেমের চার্ট এনালাইসিস করে নিবেন।
  • যতটা সম্ভব, বড় আকারের লটে এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকবেন। নিজ ট্রেডিং ব্যালেন্স অনুসারে লট/ভলিউম নির্ধারণ করবেন। আমাদের পরামর্শ হচ্ছে প্রতি ৫০০ ডলার ব্যালেন্স হিসাবে সর্বাধিক ০.০৫ লটে এন্ট্রি গ্রহন করতে পারেন। এর বেশী নয়।
  • এন্ট্রি পজিশন গ্রহনের পূর্বে, সাপোর্ট-রেসিসটেন্স এড়িয়াকে প্রাধান্য দিবেন এবং সেই H4 টাইমফ্রেম অনুসারে সেট করবেন।
  • কোনভাবেই, একদিকের এন্ট্রিতে বেশী সময়ের জন্য লস রাখবেন না। অর্থাৎ, এন্ট্রি গ্রহনের সময় নির্ধারণ করে নিবেন, একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ লস হবার পর আপনি সেটিকে কি করবেন? লসে ক্লোজ করে দিবেন নাকি হেজিং এর মাধ্যমে সমান করে রাখবেন।
  • একই সাথে একাধিক ট্রেডিং এসেটে এন্ট্রি গ্রহন করবেন না। কমপক্ষে যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার একটি এন্ট্রি লসে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত নতুন কোনও ট্রেডিং এসেটে এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকবেন।
  • এন্ট্রির পরিমাণকে কমিয়ে আনবেন। একই এসেটে, একই স্থানে একাধিক এন্ট্রি পজিশন গ্রহন করবেন না।
  • আপট্রেন্ড: হাইয়ার হাই + হাইয়ার লো  এবং ডাউনট্রেন্ড: লোয়ার হাই + লোয়ার লো ক্যান্ডেলস্টিক ফরমেশন, এই সুত্র মেনে তারপর ট্রেন্ড নির্ধারণ করবেন।
  • মার্কেটের মোমেন্টাম যদি কম থাকে, তাহলে এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকবেন।
  • ওভারনাইট এন্ট্রি যদি হোল্ড করে রাখতে হয়, তাহলে স্টপলস কিংবা হেজিং এন্ট্রি অর্ডার সেট করে রাখবেন। কেননা অনেকসময়ই ওভারনাইট প্রাইসের ব্যাপক আকারের মুভমেন্ট হতে পারে যার ফলে ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট স্টপআউটও হয়ে যেতে পারে।

Gold & OIL ট্রেডিং গাইডলাইন

যেকোনো ধরনের অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দুইটি ট্রেডিং এসেট সবথেকে বেশী পরিমাণ প্রভাবিত হয়। এদের মধ্যে একটি হচ্ছে গোল্ড (XAU/USD) এবং জ্বালানী তেল (WTI / US OIL). অর্থনৈতিক মন্দার কারনে যেহেতু অর্থনীতির পরিমাণ সংকুচিত হওয়া শুরু করে তাই, আমাদের পরামর্শ হচ্ছে এই ধরনের ট্রেডিং এসেটে ট্রেডিং করার ক্ষেত্রে কিছুটা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

  • এই দুইটি ট্রেডিং এসেটে অর্থাৎ, Commodity Asset গুলোতে ট্রেড করার জন্য কোনওরূপ ছোট টাইমফ্রেমে এনালাইসিস করা থেকে বিরত থাকবেন। চার্ট এনালাইসিস করার জন্য কমপক্ষে H4 টাইমফ্রেমের চার্ট নির্বাচন করে নিবেন।
  • যারা ছোট সময়ের টাইমফ্রেমে ট্রেড করতে পছন্দ করেন অর্থাৎ, স্কাল্পিং করতে পছন্দ করেন, অনুগ্রহ করে এই দুইটি এসেটে ট্রেড করা থেকে বিরত থাকবেন। কেননা ছোট সময়ের টাইমফ্রেমগুলোতে এই এসেটগুলো মুভমেন্ট এবং মোমেন্টাম বুঝতে পারবেন না।
  • যাদের ট্রেডিং ব্যালেন্সের পরিমাণ কম, তারা এই ধরনের ট্রেডিং এসেটে এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকবেন। অনুগ্রহ করে কমপক্ষে ৫০০ ডলার ব্যালেন্সের নিচের অ্যাকাউন্টে এন্ট্রি গ্রহন করবেন না।
  • যতটা সম্ভব, বড় আকারের লটে এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকবেন। নিজ ট্রেডিং ব্যালেন্স অনুসারে লট/ভলিউম নির্ধারণ করবেন। আমাদের পরামর্শ হচ্ছে প্রতি ৫০০ ডলার ব্যালেন্স হিসাবে সর্বাধিক ০.০২ লটে এন্ট্রি গ্রহন করতে পারেন। এর বেশী নয়।
  • একই সাথে একাধিক ট্রেডিং এসেটে এন্ট্রি গ্রহন করবেন না। কমপক্ষে যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার একটি এন্ট্রি লসে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত নতুন কোনও ট্রেডিং এসেটে এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকবেন।
  • এন্ট্রির পরিমাণকে কমিয়ে আনবেন। একই এসেটে, একই স্থানে একাধিক এন্ট্রি পজিশন গ্রহন করবেন না।
  • আপনি যদি একই সাথে কারেন্সি পেয়ার এবং গোল্ডে এন্ট্রি গ্রহন করতে আগ্রহী হন, তাহলে পরামর্শ থাকবে দুইটি ভিন্ন ভিন্ন ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করার। অর্থাৎ, একই ট্রেডিং অ্যাকাউন্টে কারেন্সি পেয়ার এবং গোল্ড কিংবা জ্বালানী তেলে এন্ট্রি পজিশন গ্রহন করা থেকে বিরত থাকবেন। ধরুন, আপনি যদি EUR/USD কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করেন এবং আপনার এন্ট্রি থাকে তাহলে একই সাথে গোল্ড কিংবা জ্বালানী তেলে কোনওরূপ এন্ট্রি গ্রহন করবেন না। যদি আপনাকে এন্ট্রি গ্রহন করতেই হয়, তাহলে ভিন্ন আরও একটি ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খুলে সেটিতে শুধুমাত্র গোল্ড ট্রেডের জন্য ব্যবহার করবেন।
  • আপট্রেন্ড: হাইয়ার হাই + হাইয়ার লো  এবং ডাউনট্রেন্ড: লোয়ার হাই + লোয়ার লো ক্যান্ডেলস্টিক ফরমেশন, এই সুত্র মেনে তারপর ট্রেন্ড নির্ধারণ করবেন।
  • মার্কেটের মোমেন্টাম যদি কম থাকে, তাহলে এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকবেন।
  • ওভারনাইট এন্ট্রি যদি হোল্ড করে রাখতে হয়, তাহলে স্টপলস কিংবা হেজিং এন্ট্রি অর্ডার সেট করে রাখবেন। কেননা অনেকসময়ই ওভারনাইট প্রাইসের ব্যাপক আকারের মুভমেন্ট হতে পারে যার ফলে ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট স্টপআউটও হয়ে যেতে পারে।
গোল্ড ট্রেডিং এর জন্য একটি বিস্তারিত গাইডলাইন রয়েছে আমাদের। অনুগ্রহ করে https://fxbd.co/SHy এই লিংক থেকে সেটি পড়ে নিতে পারেন।

প্রফিটেবল ট্রেডিং এসেট

নিচের ট্রেডিং এসেটগুলো বর্তমান সময়ে ট্রেডিং এর জন্য আদর্শ এবং প্রফিটেবল হতে পারে। আমাদের পরামর্শ থাকবে, অনুগ্রহ করে মন্দার এই সময়ে নিচের এসেটগুলোতে শুধুমাত্র এন্ট্রি পজিশন গ্রহন করার।

  • মেজর কারেন্সি পেয়ারগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র EUR/USD ; GBP/USD এবং USD/CAD এই ৩টি কারেন্সি পেয়ারে এন্ট্রি গ্রহন করতে পারেন।
  • এই ৩টি কারেন্সি পেয়ারের মধ্যে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের সামগ্রিক মুভমেন্ট তুলনামূলক কম, GBP/USD এর মুভমেন্ট অপেক্ষাকৃত বেশী এবং USD/CAD পেয়ারের জন্য লং-টার্ম এন্ট্রি গ্রহন করতে পারেন। আপনার ট্রেডিং প্যাটার্ন অনুসারে কারেন্সি পেয়ার নির্বাচন করে নিতে হবে।
  • সকল ধরনের ক্রস-কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করা থেকে বিরত থাকবেন। ক্রস কারেন্সি পেয়ারগুলোর মুভমেন্টের মোমেন্টাম অনেকবেশী থাকার কারনে, এন্ট্রি গ্রহন না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
  • সকল ধরনের JPY এবং CHF কারেন্সি পেয়ারগুলোতে এন্ট্রি গ্রহন করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ থাকছে। এই কারেন্সি পেয়ারগুলোর সার্বিক মুভমেন্টের পরিমাণ অনেকবেশী থাকে এবং ওভারনাইট প্রাইস মুভমেন্টের পরিমাণও অনেকবেশী হতে পারে। তাই এই কারন্সি পেয়ারগুলোতে ট্রেড না করার অনুরধ থাকছে।
  • Gold এবং OIL এর মধ্যে শুধুমাত্র একটি ট্রেডিং এসেট নির্বাচন করবেন। এই দুইটি এসেটে একই সাথে এন্ট্রি গ্রহন করা যাবেনা।
অনুগ্রহ করে উপরের প্রদানকৃত নির্দেশনাগুলো মেনে তারপর এন্ট্রি পজিশন গ্রহন এবং নিজের জন্য ট্রেডিং সেটাপ সাজাবেন। এতে করে আপনার সম্ভাব্য লসের পরিমাণ যেমন হ্রাস পাবে, একই রকম করে, প্রফিটেবল এন্ট্রির সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও, চাইলে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলেও যুক্ত হয়ে নিতে পারেন। এতে করে রিয়েল-টাইম ট্রেডিং গাইডলাইন সম্পর্কে জানতে পারবেন। লিংক - https://fxbd.co/telegram

আশা করি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেল সম্পর্কিত বিশেষ কোনও প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাতে পারেন কিংবা নিচে কমেন্ট করতে পারেন। প্রতিদিনের আপডেট ইমেইল এর মাধ্যমে গ্রহনের জন্য, নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করে নিতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো টিউটোরিয়াল দেখার জন্য অনুগ্রহ করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন। এছাড়াও, যুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেইসবুক এবং টেলিগ্রাম চ্যানেলে। এছারাও ট্রেড শিখার জন্য জন্য আমাদের রয়েছে বিশেষায়িত অনলাইন ট্রেনিং পোর্টাল।

কপি করুন আমাদের এক্সপার্টদের ট্রেড। জানুন বিস্তারিত

আরটিকেল সম্পর্কে মতামত
খারাপ 0 28 of 28 found this article helpful.
Views: 688

আরও জানুন

পূর্ববর্তী: ফরেক্স ট্রেডিং | Forex Trading
পূর্বের আর্টিকেলমার্কেট ট্রেন্ড নির্ধারণ
নতুনদের ফরেক্স ট্রেডিং সংক্রান্ত সকল ধরণের সহায়তা করার জন্য ,ফরেক্স বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই আমরা প্রায় ২২০০+ অধিক ট্রেডারকে, ফরেক্স ট্রেডিং সংক্রান্ত সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান করে আসছি এবং আমাদের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি। ফরেক্স ট্রেডিং সংক্রান্ত আপনার যেকোনো সহায়তার জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ ।

2 কমেন্ট

  1. অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রদান করছি আপনাকে এসব তথ্য প্রদান করার জন্য, আসলে একটি দেশের মন্দা যখন শুরু হয় তখন সে দেশের অনেকাংশই ক্ষতির সম্মুখীন হয়,
    তাই আমাদেরকে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য আপনাদেরকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি,
    সেই সাথে ফান্ডামেন্টাল ভাবে কিভাবে ট্রেডিং পলিসি বাড়ানো যায় সে বিষয়ে একটি আর্টিকেল দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি

    • কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ। ফান্ডামেন্টাল বিভিন্ন বিষয়গুলো কিভাবে ট্রেডিং মার্কেটকে প্রভাবিত করে, এই বিষয়টি নিয়ে খুব শীঘ্রই একাধিক আর্টিকেল প্রকাশিত হবে।

কমেন্ট/প্রশ্ন করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here